প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদের অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন অত্র পরিষদের সদস্যরা। গত বৃহস্পতিবার (১৪ মে) এই অভিযোগ পত্রটি পরিষদের সদস্যরা সরাসরি সাংসদ কমলের কাছে হস্তান্তর করেন। এই অভিযোগ পত্রে পরিষদের ১২ জন সদস্যের মধ্যে ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য আজিজুল হক এবং ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল আলম ব্যতিত বাকি ১০ জন সদস্যের স্বাক্ষর রয়েছে। এতে চেয়ারম্যান মোস্তাক আহামদের যাবতীয় অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা,ঘোষ বানিজ্য,পক্ষপাতিত্ততা ও স্বজনপ্রীতির চিত্র তুলে ধরে এর থেকে পরিত্রান চেয়ে সাংসদ কমলের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। চেয়ারম্যান মোস্তাক দায়িত্ব নেয়ার শুরু থেকেই বিতর্কিত হয়ে আসছেন।শুরুদিকে রামু থানার সাবেক ওসি আবুল মনসুর ও সাবেক ইউএনও শাহাজান আলির নাম ব্যবহার করে জন্ম নিবন্ধন সনদের জন্য জৈনেক বেলাল আহাম্মদের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা চাওয়ার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন এই চেয়ারম্যান। অনেক দুর্নীতি অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকার দলিয় চেয়ারম্যান হওয়ায় সবকিছু ধামাচাপা পড়ে যায়। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে দেখে শেষমেষ পরিষদের সদস্যরা তার বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমলের কাছে লিখিত অভিযোগ করতে বাধ্য হন।
সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমলের কাছে প্রদত্ত
ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযোগটি নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো: যথাযথ সম্মান সহকারে নিবেদন এইযে,আবেদনকারীগন রামু উপজেলার ৪ নং কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য / মেম্বার হই। বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাসে দিশাহারা। পাশাপাশি বাংলাদেশও করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ত্রাণ ও নগত অর্থ প্রদান করেন। যাহা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন মাধ্যমে বিলি বন্টন করেন। কিন্তু রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের চিত্র উল্টো। এই পর্যন্ত পরিষদের মাধ্যমে যে সমস্ত সরকারি বেসরকারি (এনজিও) কতৃক ত্রাণ প্রদান করা হইয়াছে তাহা পরিষদের সদস্যদের বাদ দিয়া আমাদের কোনভাবে সংশ্লিষ্ট না করিয়া চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ সম্পুর্ণ অনিয়মতান্ত্রিক ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে ভুল ও ভোয়া তালিকা তৈরি করিয়া লোকদেখানো মতে ফেসবুকে ছবি সর্বস্ব বিলি বন্টন করিয়া সিংহভাগ ত্রাণ চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করিয়াছে। ইতিমধ্যে সরকার স্থানীয় অসহায় লোকজনকে মাথাপিছু ২৫০০/= নগদ টাকা প্রদানের ঘোষনা করিলে স্থানীয় দুর্লোভি চেয়ারম্যান আমরা মেম্বারদের কোনভাবে অবিহিত না করিয়া আমাদের নিকট হইতে এলাকাভিত্তিক অসহায়দের তালিকা না নিয়া চৌকিদারদের বশে নিয়া চেয়ারম্যানের আত্মিয় পরিষদের কম্পিউটার অপারেটরের মাধ্যমে বিভিন্ন ভোয়া নাম ঠিকানা ও একই মোবাইল নাম্বার একাধিক গোপন তালিকা তৈরি করিয়া অভিনব কায়দায় সরকার ঘোষিত মাথাপিছু ২৫০০/= টাকা আত্মসাত করার পায়তারা করিতেছে। যাহা তার সৃষ্ট তালিকা পরিক্ষা করিলে সত্যতা প্রমাণিত হইবে। ইতিমধ্যে এনজিও কতৃক ১০০০ জন করোনা দুস্তদের মাথাপিছু ৪০০০/= টাকা দান দেওয়ার ঘোষনা করিলে চেয়ারম্যান মেম্বারগনকে প্রতি ওয়ার্ডে ৪০ জন করে তালিকা নিয়া বাদ বাকি সম্পুর্ন নাম চেয়ারম্যান সাহেব নিজের ইচ্ছা অনুসারে দিয়া স্বনামে বেনামে দানের টাকা আত্মসাৎ করিয়াছে। ইউনিয়ন পরিষদের হুল্ডিং টেক্স,জন্ম সনদ,মৃত্যু সনদ,ওয়ারিশ সনদ,ট্রেড লাইসেন্স, প্রত্যয়ন পত্র ইত্যাদির কোন টাকা পরিষদের তহবিলে জমা না করিয়া সম্পুর্ন আত্মসাৎ করে।অথচ প্রতিটি সনদ হইতে তিনশত পঞ্চাশ টাকা করিয়া আদায় করে। বয়ষ্ক ভাতা, বিধবা ভাত,মাতৃত্ব ভাতা পরিষদিয় সমস্ত ভাতা মেম্বারদের সাথে সমন্বয় না করিয়া চেয়ারম্যান নিজেই মনগড়া ভাবে নামমাত্র বিতরণ করিয়া সমস্ত ভাতা আত্মসাৎ করে।পরিষদে উপার্জন থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত মেম্বারদের সম্মানি ভাতা চেয়ারম্যান যথাযথ ভাবে আদায় করে নাই। এলাকায় গৃহহীনদের কাছে যে ঘর দেওয়া হইয়াছে প্রতিটি ঘর বাবদ ৩৫/২০ হাজার টাকা করিয়া আদায় করে। যাহা তদন্ত করা দরকার।চেয়ারম্যানের এহেন আচরনে আমরা জনপ্রতিনিধিগন যেমন হেয়পতিপন্ন হচ্ছি অন্যদিকে এলাকার অসহায় মানুষেরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হইতেছে। এই ছাড়াও তাহার বিরুদ্ধে বহু অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে যাহা স্বাক্ষাতে উপস্থাপন করিব। এমতাবস্থায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করিয়া এলাকার করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের ন্যায্য সহযোগিতা ও সরকারি সাহায্য পাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহন ও মেম্বারদের জনসংখ্যা অনুসারে ত্রাণ ও নগদ অর্থ বরাদ্দ প্রদানের আবেদন করিতেছি।