ফেব্রুয়ারিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু, ২৬ জানুয়ারি থেকে নিবন্ধন

সিবিকে ডেস্কঃ

আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে দেশে করোনা ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। আর ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে যে কোনো সময়ে সেরামের ভ্যাকসিন দেশে আসবে বলেও জানান তিনি।

সোমবার ( ১১ জানুয়ারি) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসব কথা জানান। এসময় টিকা বিতরণ কর্মসূচির বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন টিকা বিতরণ কমিটির সদস্য অধ্যাপক শামসুল হক।

আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ৫০ লাখ ডোজ টিকা সরকারিভাবে নির্ধারিত ইপিআই কোল্ড স্টোরেজে পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করবে বেক্সিমকো। ২৭ তারিখের মধ্যে জেলা পর্যায়ে এ টিকা পৌঁছাবে। আর ফেব্রুয়ারির শুরুতে টিকা পাবে দেশের মানুষ।

‘প্রথম ডোজ দেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দিতে হবে। তবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার নতুন তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ডোজ দেওয়ার দুই মাস পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে। নতুন নিয়ম জানার পর আমরা পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছি। এ কারণে প্রথম মাসেই একসঙ্গে ৫০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। প্রথম যে ৫০ লাখ টিকা আসবে তা দিয়ে দেওয়া হবে। দুই মাসের মধ্যে আরও টিকা চলে আসবে।’

ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর মাথা ঝিমঝিম করা, ব্যথা, বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। তবে সেটা ২ থেকে ৩ ভাগের বেশি না। যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রোধে ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম কাজ করবে বলেও তিনি জানান।

মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার নিবন্ধনের নিয়ম:

* অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপল দুই স্টোরেই অ্যাপটি পাওয়া যাবে। যেকোনও স্মার্টফোনে এটি ডাউনলোড করতে হবে।

* অ্যাপ ডাউনলোডের পর করোনাভাইরাসের টিকা নিতে আগ্রহীরা মোবাইল ফোন নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন।

* টিকাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ব্যক্তিদেরও নিবন্ধন করতে হবে।

* নিবন্ধনের জন্য প্রত্যেককে নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পেশা, শারীরিক জটিলতাসহ বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে।

* প্রত্যেক ব্যক্তি করোনাভাইরাসের দুটি করে ডোজ পাবেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের বিস্তারিত তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে।

* কোন মাসে কার কার বা কোন শ্রেণিপেশার মানুষ টিকা পাবেন তা প্রতি মাসে জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধন করতে পারবেন আগ্রহীরা।

* নিবন্ধিত ব্যক্তিদের তালিকা অনুযায়ী কবে ও কখন কাকে টিকা দেওয়া হবে, কোথায় ও কোন সময় তারা টিকা পাবেন, সবকিছু ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী নির্ধারিত কেন্দ্রে হাজির হয়ে টিকা নেওয়া যাবে।

ভ্যাকসিনেশনের সেন্টার:

উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা সদর হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, পুলিশ-বিজেপি হাসপাতাল ও সিএমএইচ, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে। টিকা দেওয়ার জন্য সাত হাজার ৩৪৪টি দল তৈরি করা হয়েছে। একটি দলের মধ্যে ছয়জন সদস্য থাকবে। এর মধ্যে দু’জন টিকাদানকারী (নার্স, স্যাকমো, পরিবারকল্যাণ সহকারী) ও চারজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বক্তব্য রাখেন।

ইত্তেফাক

  •  
  •  
  •  
  •  
  •