রুহুল আমিনঃ
মাদক ও মাদকাসক্তি বর্তমানে এক জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এখন দেশের মাদকসেবীর বৃহৎ অংশ কিশোর-কিশোরী এবং যুবক-যুবতী। যে যুব সমাজের ওপর দেশের শিক্ষা-দীক্ষা, উন্নতি, অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল, তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ যদি মাদকাসক্তিতে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে তবে সে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
এ ভয়ঙ্কর অভিশাপ থেকে আমাদের যুবক সমাজকে রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সকল প্রকার মাদকদ্রব্য যা নেশা সৃষ্টি করে, সুস্থ মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটায় এবং জ্ঞান ও স্মৃতিশক্তি লোপ করে দেয়, তা ইসলামের দৃষ্টিতে যেমন হারাম এবং রাষ্টীয়ভাবে তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
কেউ জনপ্রতিনিধি হয়ে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়েছে, আবার কেউবা ইয়াবার টাকার জোরে বসে গেছেন জনপ্রতিনিধির চেয়ারে, আবার কেউ জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে জনসর্মথন অর্জনের চেষ্টায় বিভিন্ন ভাবে অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন । এমন অভিযোগের তালিকায় রয়েছেন মানব পাচার, মাদক ব্যবসায় অল্প সময়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি টাকার বিনিময়ে পদবী পাওয়া নেতা, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যগণ । মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলেই লাপাত্তা হয়ে যায় এই জনপ্রতিনিধিরা। ফলে বিপাকে পড়ে সাধারণ জনগণ। বিগত পাচঁ বছরে এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছেন অনেক ওয়ার্ড় ও ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।
এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে আগামী নির্বাচনে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে মাশুল গুনতে হবে সাধারন জনগনকে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে বিভিন্ন এলাকায় ছেয়ে যাচ্ছে তাদের পোষ্টার ব্যানারে, যাচ্ছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। খবর নিয়ে দেখা যায় বছর দুয়েক আগে যাদের দৈনন্দিন খরচের টাকারও অভাব ছিল, মাদক ব্যবসার সাথে সমপৃক্ত হয়ে দিনে দিনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। ফলে শিক্ষিত, যোগ্যতা, সম্পন্ন মানুষগুলো তাদের মাদকের টাকার কাছে হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখে আগে থেকেই হাল ছেড়ে দিচ্ছে।
এভাবে চলতে গেলে ভবিষ্যতের নেতৃত্ব মাদক ব্যবসায়ীদের ধকলে চলে যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সরকার মাদক র্নিমুলের জন্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় জনপ্রতিনিধি মনোনয়নের ক্ষেত্রে মাদকের সাথে সম্পৃক্তদের বাদ দেওয়া জরুরী, না হয় হাজারো পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও যখন নেতৃত্ব, ক্ষমতা মাদক কারবারীদের হাতে থাকবে তখন মাদক নির্মুলে কোন পদক্ষেপই কাজে আসবে না।
মাঝে মধ্যে বিভিন্ন পত্রিকার হেড লাইন দেখি টেকনাফে জন প্রতিনিধিরা উধাও। আগামীতে যেন এমন হেডলাইন কক্সবাজারের অন্যান্য উপজেলায় না হয় তার ব্যবস্থা সাধারণ জনগণের হাতেই। মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজের শত্রু, তাদের হাতে ক্ষমতা মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অশনি সংকেত। মাদকের সাথে সম্পৃক্ত জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের কুফল টেকনাফের সাধারণ মানুষ বিগত পাচঁ বছরে বুঝতে পেরেছেন। বিগত পাচঁ বছরে এই জনপ্রতিনিধি তাদের কোন কাজে আসে নাই। কেউ জেলে আবার কেউ পলাতক থাকার কারণে সাধারণ জনগণ অনেক ভূগান্তিতে ছিলেন। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যাতায়াতের দূর্ভোগে কথা বলার জন্যে কোন জনপ্রতিনিধিকে তারা পাশে পায়নি।
সমাজের নেতৃস্থানীয় মানুষগুলো সাধারণত তরুণ সমাজের আইডল হয়ে থাকেন। এমতাবস্থায় যদি মাদকের সাথে জড়িত দেশের শত্রু গুলো জনপ্রতিনিধি হয়ে আসে তাহলে দেশের তরুণ সমাজ ধ্বংশের জন্যে এর চেয়ে খারাপ কিছু হবে না। মাদক মুক্ত সুস্থ সমাজ বিনির্মানে মাদকের সাথে সম্পৃক্তদের বয়কট করা সময়ের দাবী।
রুহুল আমিন
সম্পাদক ও প্রকাশক
কক্সবাজার খবর ডট কম