যুগান্তর:
অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, জনগণকে অন্যায়-অত্যাচার থেকে মুক্ত করার জন্য শহিদ হয়েছিলেন এগুলো তাদের ছবি। আমরা যখন প্রথম জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, দ্রব্যমূল্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিলাম, তখন ভোলাতে প্রথম নিহত হন স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম। এ ছাড়া ছাত্রদলের নুরে আলম, নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী শাওন প্রধান ও মুন্সীগঞ্জে নিহত হন শাওন ভূঁইয়া।’
‘শাওন প্রধান গাড়ির গ্যারেজে কাজ করতেন। মুন্সীগঞ্জে নিহত শাওন ভূঁইয়া মিশুক চালাতেন। ভোলায় নিহত দুই কর্মীও সাধারণ পরিবার থেকে আসা। আমাদের যেই পাঁচ ভাই পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে, দেশের গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছে, তারা সাধারণ মানুষ। এরা কেউ অর্থবিত্তের অধিকারী নয়। ধনসম্পদের মালিক নয়। কিন্তু তারা পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। তারা বলেছে, মারো আমাদের, কিন্তু এই দেশেকে মুক্ত করতে চাই। মুন্সীগঞ্জের শাওনের বাবা আমাদের কাছে এসেছিল। তিনি তার ছেলে হত্যার বিচার চান। আজকে আমরা সেই কারণে আপনাদের সামনে এসেছি।’
সমাবেশ মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘৫০ বছর হয়ে গেছে এই স্বাধীনতার। তখন যেমন যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য, সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের আবার যুদ্ধ করতে হবে। এই লড়াই শক্ত লড়াই। এই লড়াইয়ে আমাদেরকে জিততেই হবে। হয় আমরা জিতব, না হয় মরে যাব। আমরা যদি জয়লাভ করতে না পারি তাহলে এদেশে স্বাধীনতা থাকবে না। আমাদেরকে ‘কলোনীর’ মতো বাস করতে হবে। আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। এটা কেবল বিএনপির দাবি নয়, এটা এখন সমগ্র জাতির দাবি। ’
‘এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয়, জনগণের ভোটের সরকার নয়। তারা ২০১৪ সালে বিনা ভোটে ১৫৪ জনকে নির্বাচিত করে সরকার গঠন করে। পরের বার তারা আগের রাতে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে সরকার ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ গত ১৪-১৫ বছরে এই বাংলাদেশকে শ্মশান করে দিয়েছে। তারা সবকিছু লুট করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে বলেছিলেন, এখন চালের দাম ৭০ টাকা। আবার নাকি বিদ্যুতের দাম বাড়াবে। কেন? লুট করার জন্য? ডাকাতি করার জন্য? অথচ আজ দেশের মানুষ না খেয়ে মরছে। আজকে কোনো নিরাপত্তা নেই। দিনে-দুপরে ডাকতি হয়। র্যাবের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কিছু হবে না, নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে এই সরকারকে। কারণ এই সরকারের নির্দেশে গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। জাতিসংঘ পরিষ্কারভাবে বলেছে- বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই। এখানে গুম হয়, খুন হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয়। আমাদের নেতা তারেক জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।’
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচন কমিশন বানিয়েছে, যাকে ডিসি-এমপিরা মানেন না। আমাদের মাতা গৃহবন্দি। চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়া গণতন্ত্রকে মুক্তি করার জন্য এই দেশের গ্রামে-গঞ্জে চষে বেড়িয়েছেন। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছেন। খালেদা জিয়াকে যে মামলায় গ্রেফতার করে রাখা হয়েছে, সে মামলায় জামিন দেওয়া যায়। কিন্তু বছরের পর আটকে রেখেছে এই সরকার।’
‘আমাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য এই সরকারকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা বলছেন- কম খান, কম খরচ করেন। তাহলে আছেন কেন? আমরা ক্ষমতায় এলে চাল-ডাল বিদ্যুতের দাম কমিয়ে আনার চেষ্টা করব, বেকারত্ব দূর করব, মেধার ভিত্তিতে চাকরি দেব। আমরা সেই বাংলাদেশ ফিরে পেতে চাই। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পতন।’