এস এম সাদ্দাম হোসাইন:
বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন অভিযাত্রায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের পর মেট্রোরেল আরও একটি বিস্ময় জাগানো মাইলফলক অর্জন। রাষ্ট্রচিন্তায় যদি থাকে দেশ ও মানুষের কল্যাণ, তার প্রতিফলন দেখা যায় সরকারের নীতি ও পরিকল্পনায়।একসময় যে মেট্রোরেলের স্বপ্ন ছিল নগরবাসীর, সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবতা।
২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অংশ হিসাবে এ খাতে মেগা প্রকল্পসহ অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা বাস্তবায়নের পর একের পর এক উদ্বোধন করা হচ্ছে। ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার ঢাকা ম্যাস? র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট তথা মেট্রোরেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন লাভ করে। প্রথম পর্যায়ে নির্মাণের জন্য এমআরটি-৬ নামক ২০.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ নির্ধারণ করা হয়। রাজধানীর যানজট নিরসনে এবং সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগেই শুরু হয় মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। তিনি দেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেল ২০১৬ সালের ২৬ জুন এমআরটি-৬ প্রকল্পের নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। জাপানের অর্থ ও কারিগরি সহায়তায় নির্মীয়মাণ মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার। রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ছুটে বেড়াবে ট্রেন। প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১.৭৩ কিলোমিটার রেলপথ চালু হবে।
মেট্রোরেল ঢাকা মহানগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার যানজট নিরসনে এবং পরিবেশ উন্নয়নে অপরীসিম ভূমিকা পালন করবে।মেট্রোরেলে প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রীর যাতায়াত করার সক্ষমতা রয়েছে। এই পরিবহণ ব্যবস্থা মানুষের জীবনধারা পরিবর্তন এবং উৎপাদনশীল সময় বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আমার সমুদ্রনগরী কক্সবাজার জেলাকে যা দিয়েছেন তা আমরণ ভুলবে না জনগণ। গত ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে চলমান কর্মযজ্ঞের মাঝে সম্পন্ন হওয়া ২৮টি প্রকল্প উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। আধুনিক ও পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে কক্সবাজারকে গড়ে তুলতে মহাপরিকল্পনায় ১০টি মেগা প্রকল্পসহ ছোট-বড় ৭২টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এরই মধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক, খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, লিংকরোড় থেকে হলিডে মোড় সড়ক এবং মহেশখালী ডিজিটাল আইল্যান্ডে সম্পন্ন হওয়া প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করছে জনগণ। চলমান প্রকল্প থেকে আরও ২৮টি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সততা, সাহসিকতা, সময়োপযোগী পরিকল্পনা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নের মাধ্যমেই দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে আস্থা ফিরেছে আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন যে অস্তমিত হয়নি, এসব উন্নয়ন প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নই তার প্রমাণ। এই অবিশ্বাস্য রকমের বদলে যাওয়াকে সাধারণ মানুষ এখন আর গল্প মনে করে না; বরং মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে, শেখ হাসিনার জাদুর ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের কাছে উন্নয়নের বিস্ময় এখন বাংলাদেশ।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নতুন রূপকল্প “স্মার্ট বাংলাদেশ” বিনির্মাণে মেট্রোরেলসহ সমন্বিত আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সম্মুখ ভূমিকা রেখে অগ্রসর হবে।