সুপ্রিম কোর্টে সিনিয়র এডভোকেট হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেন কক্সবাজারের সন্তান ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ। সুপ্রিম কোর্টের ২৭ জন আইনজীবীকে আপিল বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মিজান সাঈদ কক্সবাজার জেলার প্রথম সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। এ অর্জন তিনি কক্সবাজারের মানুষের প্রতি উৎসর্গ করেছেন। মিজান সাঈদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার ব্যাক্তিগত আইডি থেকে পোস্ট করে লিখেন, “আলহামদুলিল্লাহ । বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হলাম । পেশাগত জীবনের শেষ মাইলফলকটি স্পর্শ করতে পারায় সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা।”

ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের বিশিস্ট শিক্ষানুরাগী এডভোকেট সাঈদ রমজানুল আলমের জৈষ্ঠ্য পুত্র।

তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের তালিকাভুক্ত আইনজীবী হিসেবে সনদ প্রাপ্ত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে প্র্যাকটিস করার অনুমতি পান । ২০১৫ সালে আপনি বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং ২০২৩ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের “সিনিয়র আইনজীবী” হিসেবে তালিকাভুক্ত হলেন যেটা আইন পেশার সর্বোচ্চ খেতাব বলে পরিগনিত হয় ।

উল্লেখ্য, তিনি ১৯৮৫ সনে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৮৭ চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এলএল. বি. (অনার্স) করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯২ সালে এলএল.এম পাশ করেন। তাছাড়া তিনি পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা অন হিউম্যান রাইটস এন্ড লিগ্যাল এইড-১৯৯৪-হিউম্যানিস্ট এন্ড এথিকেল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ উলভারহ্যাম্পটন থেকে ২০০২ সালে এলএল.বি(অনার্স) পাশ করেন। পরে ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ নর্দামব্রিয়া এট নিউ ক্যাসল থেকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা (পিজিডি) অন বার ভোকেশনাল কোর্স (বিভিসি) অর্জন করেন।

দেশ-বিদেশে পড়াশোনা করে পেশাগত জীবনে বিগত ২৮ বৎসর ধরে সুনামের সাথে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ ও আপীল বিভাগের একজন নিয়মিত আইনজীবী হিসাবে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।

ওয়ান ইলেভেনের সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেনা সমর্থিত তৎকালীন অবৈধ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের করা মামলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে নিযুক্ত প্রধান আইনজীবী মরহুম ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের সহযোগী আইনজীবী হিসেবে শেখ হাসিনার মুক্তিতে বিশেষ অবদান রাখেন। ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসও অন্যান্যদের সাথে ওই লিগ্যাল টিমের সদস্য ছিলেন।

সুদীর্ঘ ২৮ বছরের পেশাগত জীবনে তিনি বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশী কোম্পানি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও দেশের বিশিষ্টব্যক্তিবর্গের পক্ষে মহামান্য হাইকোর্ট ও আপীল বিভাগে প্রতিনিধিত্ব করেন। তাছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রজেক্টে বিশেষজ্ঞ আইনজীবি হিসেবে দুই বছর (২০০৪ থেকে২০০৬) রেসিডেন্ট লিগ্যাল এডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঐ সময় ফরাসী ল ফার্ম- জিড লরেট নুয়েল এবং ভারতীয় ল ফার্ম- ফক্স মন্ডল এর সাথে যৌথ উদ্দ্যোগে ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন ১৯৯৩ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ এ তিনটি আইনের উপর বিশেষ পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট একটি সংস্কার রিপোর্টপ্রদান করেন। ঐ সময় ব্যারিষ্টার মিজান বাংলাদেশ ব্যাংকের আইন বিভাগের পূনর্গঠন, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক সমুহকে কোম্পানীতেপরিবর্তন, মানি লন্ডারিং আইন সংশোধন ও সময় সময় বিভিন্ন রেগুলেটরী ইস্যুতে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শক হিসেবেগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বনকারী এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উত্তোলনকারী ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে আনীত আদালত অবমাননার মামলায় প্রধান কৌঁসুলীর দায়িত্ব পালন করেন এবং উক্ত মামলায় কাঙ্খিত সফলতা পান। ডেভিড বার্গম্যান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের রায়েরবিরুদ্ধে করা তার আপত্তিকর মন্তব্যের জন্যে আদালত অবমাননার অভিযোগে দন্ডিত হন।

আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের সই করা সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৭ আইনজীবীকে আপিল বিভাগের সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, দেলোয়ার হোসেন, আবদুস সোবহান, মো. আসাদুজ্জামান, একেএম ফজলুল হক খান ফরিদ, রুহুল কুদ্দুস, ওজি উল্লাহ, ড. নাঈম আহমেদ, কামরুন নেসা (রত্না), পঙ্কজ কুমার কুন্ডু, রমজান আলী শিকদার, আবুল খায়ের, শাহ মঞ্জুরুল হক, এবিএম সিদ্দিকুর রহমান খান, এম এ আজিম খায়ের, ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, গোলাম আব্বাস চৌধুরী, মিজান সাঈদ, জহিরুল ইসলাম খান (জেড আই খান), রবিউল আলম বুদু, আবদুল নূর, ফরহাদ আহমেদ, আবদুল মাবুদ মাসুম, মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান খান ও আবু সাঈদ (সাগর)।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •