নিজস্ব প্রতিবেদক,রামু
কক্সবাজারের রামু উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মচারী(মেকানিক) দেলোয়ার হোছাইন দীর্ঘ ১২ বছর একই কর্মস্থলে কর্মরত। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে চাকরির সুবাদে অনেকটা আগ্রাসী মনোভাবী হয়ে উঠেন দেলোয়ার। যার প্রেক্ষিতে নিয়ম নীতি লঙ্গন করে চালিয়ে আসছিলো নানা অনৈতিক কর্মকান্ড।
সরজমিনে পরিদর্শন ও ভুক্তভোগীদের তথ্যানুসারে বেরিয়ে এসেছে নলকুপ মেকানিক দেলোয়ারের অনিয়ম দূর্তিণীতির পিলে চমকানো তথ্য।
সারা দেশে পানি সরবরাহ প্রকল্প(প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প) এর অধীনে প্রতি ডিপ টিউবওয়েল এর জন্য সহায়ক চাঁদা সরকারীভাবে নির্ধারিত ৭ হাজার টাকা হলেও উপকারভোগীর কাছ থেকে আদায় করছে ২০-২৫ হাজার বা তার অধিক টাকা।
এরকম নানান অভিযোগ কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ায় অবশেষে তার বদলির আদেশ জারি করা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারী চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ আলী আজগর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে রামু জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মচারি নলকুপ মেকানিক পদের দেলোয়ার হোছাইনকে জনস্বার্থে ও প্রশাসনিক কারনে রামু থেকে টেকনাফ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে বদলি করা হয়েছে। একই চিঠিতে নলকুপ মেকানিক ইখতিয়ার উদ্দিনকে রামু জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে পদায়ন করা হয়।
এদিকে বদলি আদেশের ৬ দিন অতিবাহিত হলেও নানা অনিয়মে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোছাইন বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান করেনি। কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে রামু জনস্বাস্থ্য অফিসে বহাল তবিয়তে থাকার জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সুত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যে মোটা টাকার মিশন নিয়ে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করতে সংশ্লিষ্ট দফতরে চেষ্টা তদবীর চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযুক্ত কর্মচারী দেলোয়ার হোছাইনের বাড়ি রামু উপজেলার মিঠাছড়ি ইউনিয়নে, সে বিগত ২০১২ সালে রামু উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে নলকুপ মেকানিক পদে যোগদান করেন। সরকারী কর্মস্থলে তিন বছর কর্মরত থাকার পর সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে বদলীর জন্য সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের লিখিত নির্দেশনা থাকলেও রামু জনস্বাস্থ্য অফিসের নলকুপ মেকানিক দেলোয়ার হোছাইনকে এতোদিন বদলি করা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, একই কর্মস্থলে ১২ বছর ধরে কর্মরত থাকার সুযোগকে পুঁজি করে দেলোয়ার রামুর বিভিন্ন ইউনিয়নে পাড়া মহল্লায় গড়ে তোলেছে একটি বিশাল সিন্ডিকেট।
জানা যায়, রামু উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিগত ১২ বছরে ধরে সরকারী টিউবওয়েল বাণিজ্য, সাব ঠিকাদারী, ব্যবসাসহ এমন কোন অনিয়ম নাই যা দেলোয়ার নিজ কর্মস্থলে সংগঠিত করেনি।
এছাড়া জরুরী প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে যে টয়লেট গুলো প্রদান করা হচ্ছে সেখান থেকেও মোটা অংকের টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে একাধিক উপকারভোগীর অভিযোগ রয়েছে।
ধেছুয়া পালং এলাকার আবদুর রহিম অভিযোগ করে জানান, একটি ডিপ টিউবওয়েল এর জন্য সরকারি সহায়ক চাঁদা ৭ হাজার টাকার স্থলে তার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।
মেরংলোয়া এলাকার ওবাইদুল হক জানান, টিউবওয়েল স্থাপনের পর প্লাটর্ফম নির্মান না করে অনেকটা দায়সারাভাবে কাজ শেষ করেছে জনস্বাস্থ্য অফিস।
এব্যাপারে অভিযুক্ত রামু জনস্বাস্থ্য অফিসের নলকুপ মেকানিক দেলোয়ার হোছাইন সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এব্যাপারে রামু উপজেলা জনস্বাস্থ্যের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ক্যছাই মং চাক্ বলেন, নলকুপ মেকানিক দেলোয়ার হোসাইনের বদলির আদেশ হয়েছে। তিনি জানান, বদলি একটা চলমান প্রক্রিয়া। যথাসময়ে বদলি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে