সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) এর আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস -২০২৪ উদযাপন।

০৯ মার্চ, ২০২৪, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা – স্কাসের আয়োজনে ইনানী মেরিন ড্রাইভস্থ ইনানী ফুটবল মাঠে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয়েছে। ”নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ,- এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ” – প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়।

এই উপলক্ষে সকাল ১০ ঘটিকায় স্কাস চেয়ারপার্সন জনাব জেসমিন প্রেমার নেতৃত্বে কক্সবাজার স্কাসের প্রায় চার শতাধিক স্টাফসহ নারীদের ক্ষমতায়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রমের বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্লে-কার্ডসহ একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালির আয়োজন করা হয়। র‍্যালিটি ইনানী ওয়াক বীচ ক্যাফ হতে শুরু হয়ে ইনানী ফুটবল মাঠের পাশে সমুদ্র তীরে গিয়ে শেষ হয়।

র‍্যালির শেষে ”পর্যটন হউক নারী বান্ধব” এই স্লোগানকে সামনে নিয়ে স্কাস চেয়ারপার্সন জেসমিন প্রেমার নেতৃত্বে এক মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে স্কাস চেয়ারপার্সন বলেন আমরা স্কাসের পক্ষ থেকে এই নারী দিবসে আহবান জানাতে চাই কোন নারী পর্যটক যেন যৌন হয়রানীর শিকার না হয়। পর্যটন যেন নারী ও শিশু বান্ধব হয়। তিনি আরো বলেন, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী সেদেশে নারী পর্যটক ভ্রমনে এসে ইভটিজিং মুক্ত, নিরাপদে বাসায় ফিরবে এমনটাই আমরা আশা করি।

মানববন্ধন শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতি অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়, উক্ত অনুষ্টানে স্কাসের কর্মীরা গান, কবিতা ও কৌতুক পরিবেশন করেন।

মনোজ্ঞ সংস্কৃতি অনুষ্টান শেষে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। খেলাধুলার মধ্যে রয়েছে ফুটবল, বালিশ খেলা, চেয়ার খেলা, হাড়িঁভাঙ্গা ইত্যাদি। উক্ত খেলাধুলায় স্কাসের কর্মীরা ও অতিথিগণ অংশগ্রহন করেন।
খেলাধুলা শেষে সকলে মধ্যাহ্নভোজ গ্রহন করেন। মধ্যাহ্নভোজ পরবর্তী আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জনাব জেসমিন প্রেমা, স্কাস চেয়ারপার্সন।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মুজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক, প্রেস ক্লাব কক্সবাজার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার, সভাপতি- উখিয়া প্রেসক্লাব, জনাব শফিক আজাদ, সভাপতি – উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাব, জনাব এহসান কুতুবী, জেলা প্রতিনিধি, যমুনা টিভি, জনাব মনোতোষ বেদাজ্ঞ, জেলা প্রতিনিধি, এখন টিভি, জনাব ফারুখ আহমদ, প্রতিনিধি, যায়যায়দিন সহ বিভিন্ন সমাজ সচেতন সম্মানীত ব্যক্তিবর্গ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, জনাব মুজিবুল ইসলাম বলেন, স্কাস চেয়ারপার্সন জেসমিন প্রেমার নেতৃত্বে পরিচালিত স্কাসে ৭০ ভাগ নারী ও ৯০ ভাগ স্থানীয় লোকজন কাজ করেন যাহা স্থানীয়দের জন্য স্বস্তির বিষয়। তিনি বলেন সমঅধিকার, সমসুযোগ আদায়ের জন্য নারীদেরকে আরো কর্মমুখী হতে হবে। স্বাস্থ্য, আইন, ব্যবসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে তাদের কর্ম দক্ষতার কারণে। তিনি বলেন অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য নারী উন্নয়নের অগ্রসেনানী জেসমিন প্রেমাকে আমরা অনুসরণ করতে পারি।

তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধে যারা বাবা হারিয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন তারা সবাই যেন পিতার নামের জায়গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিখে এবং ঠিকানার জায়গায় ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার লিখেন। তাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে হলে সকলের উচিত হবে নারীদের সমঅধিকার, সমসুযোগ নিশ্চিত করা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উখিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জনাব সাঈদ মোহাম্মদ আনোয়ার বলেন বর্তমান যুগে নারীরা অনেক কিছু করতে পারে সেটা আমি বিশ্বাস করি, তাই নারীদের অধিকার নারীদের অর্জন করে নিতে হবে। বাংলাদেশের পরিসংখ্যানে নারীরা অনেক পিছিয়ে তাই সকল নারীদের পড়াশোনার পাশাপাশি কাজে মনযোগ দিতে হবে। তিনি নারীদেরকে স্কাস চেয়ারপার্সন জেসমিন প্রেমাকে অনুসরণ করার আহ্বান জানান।

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি জনাব শফিক আজাদ, বলেন স্কাস চেয়ারপার্সন জেসমিন প্রেমা উখিয়াতে কাজ করা উখিয়াবাসীর জন্য আর্শিবাদস্বরুপ, কারণ উনার মাধ্যমেই উখিয়া তথা সারাদেশের নারীরা নিজেদেরকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। স্কাসের প্রতি কৃতজ্ঞতা এই জন্যে কারণ স্কাসের ৯০ ভাগ কর্মী কক্সবাজার তথা উখিয়ার স্থানীয়।

সভাপতির বক্তব্যে স্কাস চেয়ারপার্সন জেসমিন প্রেমা বলেন, জীবনকে যত সহজ ও সুন্দর ভাবা যায়, জীবন তত সুন্দর ও সুখী হয়। নারী স্বাধীনতা মানে উশৃঙ্খলতা নয়।নারী স্বাধীনতা মানে অধিকার ও সমবন্টন সৃষ্টিকরা। আমাদের উচিত নারীদের ইতিবাচক দিক গুলো তোলে আনা। আমাদের উচিত নারী বান্ধব পর্যটন তৈরী করা। নারী মানে মা, বোন, স্ত্রী, কন্যা তাই কিছুতেই তাদের সম্মান যেন হানি না হয়। তিনি বলেন সকল নারী তাদের নিজস্ব অধিকার নিয়ে সুস্থ থাকুক এই কামনা করি।

বক্তব্যে স্কাস চেয়ারপার্সন বলেন, নারী প্রধান এনজিও হিসেবে স্কাস শত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার নারীদের উন্নয়নে, ক্ষমতায়নে ১৯৯৫ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। কারণ আমরা বিশ্বাস করি নারীদেরও কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে, সেই সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে পারলে দেশে দক্ষ জনশক্তির পরিমান দ্বিগুন হবে। ফলে আমাদের ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে অর্জিত এই সোনার বাংলাদেশ উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশে রূপান্তর হবে। তখন আমরা বিশ্বের দরবারে বাঙ্গালী জাতি হিসেবে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবো, বিশ্ববাসী জানবে বাঙ্গালী জাতি স্বনির্ভরজাতি।

উল্লেখ্য যে, স্কাসের প্রত্যেক প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন, উন্নয়ন, স্বনির্ভরশীলতা ও নারী শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে “নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ, – এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ” – প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৪ পালন করেছেন ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •