পুলিশি হয়রানি বন্ধে প্রশাসনের প্রতি রামুতে নিরপরাধ পরিবারের আকুতি

 

বার্তা পরিবেশকঃ

বিগত কিছুদিন যাবৎ আমি এবং আমার পরিবার একটি সমস্যায় পতিত হয়েছি। তাই নিজের কিছু বিষয় প্রকাশ করার জন্য আজকে ফেইসবুকে আমার এই পোষ্ট।

আমি একজন নিতান্তই সাধারণ মানুষ। সবসময় নিজের আপন গন্ডিতে ব্যস্ত থাকায় আমার অভ্যাস। কিন্তু গত ১৪/০৩/২০২৪ খ্রি: তারিখের পর থেকে আমি এবং আমার পরিবারের প্রত্যেকে আতংক এবং উৎকন্ঠায় দিন পার করছে।

ঘটনার সূত্রপাত:
বিগত ১৪/০৩/২০২৪ খ্র্রি: তারিখ আনুমানিক ২.০০ ঘটিকা থেকে ৩.০০ ঘটিকার মধ্যে রামু শ্রীধন পাড়ার বাসিন্দা শ্রী অমৃত দে সুমন ও কৃষ্ণা রাণী দে’র কন্যা পায়েল দে (১৯) পূর্ব প্রেমের সম্পর্কের জেরে পরিবারের অমতে নিজ সিদ্ধান্তে গোপনে বাড়ী থেকে পালিয়ে যায়। এরপর পায়েল দে’র মা, চাচা, চাচী ও তার ভাইয়ের মাধ্যমে আমি ঘটনা বিস্তারিত জানতে পারি যে, রামু মধ্য মেরংলোয়ার বাসিন্দা জনাব রুহুল আমিন ও নুর নাহার বেগম এর ছোট ছেলে শাহিদ ফরিদ রায়হান (২৫) যে সম্পর্কে আমার ছোট ভাই হয়, তাকে আমাদেরই এক পরিচিত জনের মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন করে ঢেকে নিয়ে দুজনে একসাথে যাত্রা করে এবং দুজনের মোবাইল দুটি বন্ধ করে দেয়।
ঘটনা জানতে পেরে আমি তৎক্ষণাথ আমার ব্যবসা ফেলে এক পরিচিত বড় ভাই সহ বেরিয়ে পড়ি যাতে ঘটনাটি সংঘটিত না হয়। খোজাখুজির পর আমরা তাদেরকে না পেয়ে ফিরে এসে নিখোজ পায়েল দে’র পরিবারের সদস্যদের সাথে রামু ফুলকলিতে একসাথে বসে আলাপ করি এবং তাদের সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করি ও নিজেরা আপ্রাণ চেষ্টা করি দুজনেকে খুঁজে বের করার জন্য। কিন্তু কোনদিক থেকে কোনভাবে খোজ না পেয়ে পায়েল দে’র পরিবার আমার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে অপহরণের আরোপ তোলার চেষ্টা করছে। পারিবারিক দায়িত্ববোধ থাকায় আমি আমার জায়গা থেকে আপ্রান চেষ্টা চালিয়েছি দুজনের সাথে কোনভাবে যোগাযোগ করা যায় কি না। কিন্তু আমি তাদের সম্পর্কে যে সমস্ত তথ্য পেয়েছি তা সবই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাদের এহেন কাজে আমি কিংবা আমার পরিবারের কোন সদস্য জড়িত নয় এবং ভবিষ্যতেও তাদের এই সমস্যার সমাধান তারা নিজেরাই করবে।
যদিও দুজনেই বাংলাদেশের প্রচলিত সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়স্ক ও নিজ সিদ্ধান্তের অধিকারী তদুপরি তারা পরিবারের অমতে পালিয়ে গিয়ে উভয় পরিবারকে সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছে যা একজন বুদ্ধিদীপ্ত মানুষের র্নিবুদ্ধিতার পরিচয় এবং এটি কোন ভাবেই গ্রহণেযোগ্য নয়। একজন মুসলিম হিসেবে তাদের দুজনের এহেন কাজকে আমি বা আমার পরিবার কোনভাবে সমর্থন করি না। তাদের দুজনের এহেন কাজের জন্য একমাত্র তারা দায়ী। তাদের এই কর্মকান্ডে দুই সম্প্রদায়ের সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
আমার সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন যারা আছেন তারা সবাই আমার সম্মন্ধে কম বেশী জাননে যে, আমি অন্যায় পছন্দ করি না এবং কখনো অন্যায়কে সমর্থন করি না। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আমার ছিন্নভিন্ন পরিবারকে আবার একটু একটু করে একত্রিত করার প্রাণপন প্রয়াস চালাচ্ছি। নিরলস পরিশ্রম শেষে কিছুটা অগ্রসর হতেই বিভন্ন সমস্যা মোকাবেলা করে নিজেকে একটি অবস্থানে আনার চেষ্টা করছি।

কিন্তু ঠিক সেই সময়ে এ ধরণের অগ্রহণযোগ্য কাজ আমার সামনে আরেকটি সমস্যা দাড় করিয়েছে। আমি সৌভাগ্যবান যে আমি এমন একটি জায়গায় বসবাস করি যেখানে সব ধর্মের সহাবস্থান, সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও সম্প্রীতির মেলবন্ধন রয়েছে। আমি নিজেও সকল ধর্মকে সম্মান করি কিন্তু নিজ ধর্মের অবমাননাকে আমি কখনো সমর্থন করি না।

আমি আরো উল্লেখ করছি যে, উক্ত ঘঠনার সাথে আমি বা আমার পরিবারের কারো সমর্থন বা সহযোগীতা না থাকলেও প্রত্যেকদিন রাতে আমার বাড়ীতে রামু থানা হতে পুলিশ গিয়ে আমি, আমার মা, বোনকে গ্রেফতার পূর্বক হয়রানি করার চেষ্টা করছে। যার কারনে আমরা আজ প্রায় তিন রাত গৃহত্যাগ পূর্বক পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হয়েছি।

এমতাবস্থায় প্রশাসনের এহেন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে আমি যথেষ্ট হতাশ ও মর্মাহত।

উক্ত ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং মান্যগণ্য ব্যক্তিগণ নিজ নিজ অবস্থান থেকে চেষ্টা করছেন। প্রশাসনের প্রতি আমার আর্জি থাকবে দুজনকে খুজে বের করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এছাড়া আমি আরো চাই এ ঘটনায় আমি এবং আমার পরিবার সহ অন্যান্য যে সকল নিরীহ ব্যাক্তিগণ হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন তাদের যাতে অযথা হয়রানি করা বন্ধ করা হয়।

উক্ত বিষয়টি মহান সংসদের মাননীয় হুইপ জনাব আলহাজ¦ সাইমুম সরওয়ার কমল এম.পি মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে এবং উক্ত ঘটনার আশু সমাধানের জন্য মাননীয় হুইপ মহোদয়, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

পরিশেষে আল্লাহ সবাইকে ভাল রাখুন।

 

নিবেদক:

হুমায়ুন ফরিদ সেলিম

পিতা: রুহুল আমিন

সাং: মধ্যম মেরংলোয়া,রামু

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •