নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের রামুতে প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে চাচা-ভাতিজাকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। বরং অভিযোগ উঠেছে- পরোয়ানাভুক্ত ওই আসামির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে উল্টো ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধেই চাঁদাবাজী মামলায় আদালতে মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন রামু থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন।
এ ঘটনায় শনিবার (১১ অক্টোবর) ভুক্তভোগী জিটু বড়ুয়া তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী জিটু বড়ুয়া কক্সবাজারের রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের হাজারীকুল গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জানান, গত ২৪ জুন খোকন বড়ুয়ার নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী তাকে ও তার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
দুই দিন পর তিনি রামু থানায় খোকন বড়ুয়াসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলার ২ ও ৩ নম্বর আসামি জামিন পেলেও প্রধান আসামি খোকন বড়ুয়া এখনো পলাতক।
এদিকে পাল্টা প্রতিশোধ নিতে খোকন বড়ুয়া ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে জিটু ও তার বাবার বিরুদ্ধে আদালতে আরেকটি মামলা করেন। দুই মামলারই তদন্তভার পান এসআই মো. কামাল হোসেন।
জিটু বড়ুয়ার অভিযোগ, চাঁদাবাজির মামলায় প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলে তার কাছে এক লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন এসআই কামাল হোসেন।
তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে, তড়িঘড়ি করে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলায় মিথ্যা প্রতিবেদন দেন। সেই প্রতিবেদনে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির কথাও উল্লেখ করা হয়-যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে জানান জিটু বড়ুয়া।
জিটুর বাবা শিবু বড়ুয়াও অভিযোগ করেন, পরোয়ানাভুক্ত আসামি খোকন বড়ুয়াকে আটক না করে এসআই কামাল তার কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই প্রতিবেদন দিয়েছেন। এতে আমরা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছি।
এলাকাবাসী জানান, বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধ থেকে হামলা হয়েছিল, কিন্তু চাঁদা দাবির কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি সম্পূর্ণ সাজানো নাটক।
অভিযুক্ত এসআই মো. কামাল হোসেন বলেন, আমি খোকন বড়ুয়ার সঙ্গে ফোনে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত জেনেছি। তবে কেন পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে আটক করা হয়নি-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, খোকনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা আছে, তা আমি আগে জানতাম না।
ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, দুটি মামলার প্রতিবেদনই আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এডভোকেট শিপ্ত বড়ুয়া জানান, এর আগেও সিভিল মামলায় নিরপরাধ দুইজন নির্মাণ শ্রমিককে বে-আইনিভাবে আটক করে প্রায় ১০ ঘন্টা আটকে রেখেছিল এসআই কামাল। তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিভাগীয় তদন্ত দাবী করছেন।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আরিফ হোসাইন জানান, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন শাহীন বলেন, লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
