এক মহিলার কথায় রেনুকে মারছি’, আদালতে হৃদয়

ডেস্ক নিউজঃ

রাজধানীর উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থান করা এক নারীর কাছে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর ছবি ছিল। সেই নারী প্রথম সবাইকে জানান, রেনু ছেলেধরা। সেই নারীর কথামতো, রেনুকে পিটিয়ে হত্যা করেন হৃদয়সহ অন্যরা।
বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে আসামি হৃদয় এসব কথা বলেন।
আদালতে শুনানিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম বলেন, আসামি হৃদয় যেভাবে ভিকটিমকে হত্যা করেছে, দেশবাসী তাতে স্তব্ধ হয়ে গেছে। ৪০০ থেকে ৫০০ জন আসামির মধ্যে এই আসামি হচ্ছেন মাস্টার মাইন্ড। রেনুর পাঁচ বছর বয়সী শিশু তুবা এখনো জানে না তার মা গুজবের মধ্যে পড়ে মারা গেছেন। বাচ্চাটা আজও তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করে আছে।
আইনজীবী বলেন, এটা শুধু একটি গুজব নয়। একটি বড় ধরনের যড়যন্ত্র। হত্যার পরে আসামিকে যেন কেউ চিনতে না পারে সে জন্য তিনি মাথার চুল কেটে ফেলেছেন।
এরপর বিচারক হৃদয়কে প্রশ্ন করে বলেন, আপনার পক্ষে কোনো আইনজীবী আছে কি না? জবাবে হৃদয় বলেন, না, কোনো আইনজীবী নেই।
বিচারক আবার বলেন, আপনি কেন খুন করেছেন?
তখন হৃদয় বলেন, এক মহিলা বলেন, ওই নারী (রেনু) ছেলেধরা। সেই মহিলা দাবি করেন, তাঁর কাছে রেনুর ছবিও আছে। এরপর ছেলেধরাকে স্কুলের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেও তাঁকে মারা হয়। এরপর নিচে নামিয়ে এনে আরো মারা হয়। এরপর আমিও মারতে শুরু করি। ওই মহিলার কথায় আমি মারছি।
এরপর বিচারক হৃদয়কে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
মঙ্গলবাররাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিবির পূর্ব বিভাগের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) নাজমুল হাসান ফিরোজ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ডিবির পূর্ব ডিভিশনের অবৈধ মাদক উদ্ধার টিম মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় হৃদয় তার ছোট খালা খালেদার বাসায় ছিলেন।
গত ২০ জুলাই শনিবার সকালে ঢাকার উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাসলিমা বেগম রেনুকে (৪০) ‘ছেলেধরা’ গুজব ছড়িয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। দুই ছেলেমেয়েকে ভর্তির জন্য সেখানে খোঁজ নিতে গিয়ে গুজব ছড়িয়ে পিটুনি দিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়। পরের দিন রোববার লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানের বাবার কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর বোনের ছেলে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত হৃদয়সহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাসলিমা বেগম রেনুকে হত্যার পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে হৃদয়কে লাঠি দিয়ে তাসলিমাকে আঘাত করতে দেখা যায়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •