‘আমার মন খারাপ’, ঢাবি শিক্ষক বললেন ছেলেটি সাহসী কাজ করেছে

সিবিকে ডেস্কঃ

রাজধানীর ভাষা প্রদীপ উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণ হিসেবে ‘মন খারাপের কথা’ উল্লেখ করে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর ছুটি মঞ্জুরের আবেদনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনদের অনেকে তার এই আবেদন নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট ও মন্তব্য করেছেন।

তবে মন খারাপের কথা উল্লেখ করে এই শিশুশিক্ষার্থীর ছুটির আবেদনকে সাহসী কাজ হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহজাবিন হক।

সোমবার (৭ নভেম্বর) ওই শিক্ষার্থীর ছুটির আবেদনের ভাইরাল ছবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে এ কথা জানান।

ড. মেহজাবিন বলেন, শিক্ষার্থী যদি এ আবেদন সত্যিই করে থাকে তা খুব প্রশংসনীয়। সে খুব সাহসী কাজ করেছে। শিক্ষকদের উচিত ছিল এই শিক্ষার্থীকে কাছে এনে তার সমস্যাটা কী বুঝতে চেষ্টা করা। উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীরা শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি মানসিক অসুস্থতা, বিষণ্নতার কারণেও ছুটি পেয়ে থাকে। এই শিক্ষার্থীও একই কারণে ছুটি পেতে পারে।

শিশুদের মন খারাপের কথা শোনা ও তাদের কথা বলার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাপক ড. মেহজাবিন বলেন, আমাদের সমাজে বাচ্চাদের কথা বলার সুযোগ খুব কম দেওয়া হয়। সবাই বলে চুপ থাকো, চুপ থাকো। তারা কথা বলতে না পারলে তাদের মনের মধ্যে অন্যকিছু কাজ করে। তাদের মনের মধ্যেও হতাশা, বিষণ্নতা থাকে। শারীরিক অসুস্থতার আগেও অনেকের মন খারাপ থাকতে পারে। এজন্য শিশুদের মন খারাপের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

শিক্ষকদের দায়িত্ব নিয়ে তিন বলেন, শিক্ষার্থীর মন খারাপ থাকলে তা শিক্ষকদের শোনা উচিত। অনেক সময় বন্ধুদের বললে তারা তা গুরুত্ব দিয়ে দেখে না, মজার ছলে নেয়। এটা শিশুর মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এজন্য শিক্ষকদের উচিত শিশুদের কথা মন দিয়ে শোনা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, প্রধান শিক্ষক বরাবর ৬ নভেম্বর শিশুশিক্ষার্থী মুহতাদীর ভাইরাল হওয়া সেই ছুটির আবেদনপত্রে লিখেছে, ‘জনাব বিনীত নিবেদন এই যে আমি আপনার বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্র। আমার মন খারাপ থাকার কারণে আমি গত ৩/১১/২০২২ তারিখে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে পারিনি। অতএব বিনীত প্রার্থনা, এই যে আমাকে উক্ত একদিনের ছুটি মঞ্জুর করে বাধিত করবেন।’

পরে তার এই ছুটির আবেদনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •