সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। চরম অবিচার চলছে। খুনিরা পার পেয়ে যাচ্ছে। অথচ সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জামিন দিচ্ছে না আদালত। আইনের ধারায় যে মামলা গ্রহণযোগ্যতাই নেই এমন মামলায় নিরপরাধ লোকদের কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজার (জেইউসি) এর দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
২৩ ডিসেম্বর সকালে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সভায় রুহুল আমিন গাজী বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি। কিন্তু আজ কি দেখছি? মানুষের ভোটাধিকার বলতে নেই। স্বাধীন মত প্রকাশ করা যায় না। সত্য কথা বলতে গেলেই প্রতিবন্ধকতা আসবে, তা মেনে নিতে হবে।
তিনি বলেন, মামলা যতই দেওয়া হোক না কেন, আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলবোই। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে আমরা অবিচল। এই লড়াই দুর্বার লড়াই। আমরা থামব না। সফল না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়ব না।
সাংবাদিক নেতা গাজী বলেন, পাকিস্তানকে হটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম করেছিলাম। আজ কি হচ্ছে? অঘোষিত বাকশাল চলছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া কারো রাজনীতি করার যেন কোন অধিকার নেই। নিজে মুক্তিযোদ্ধা হলেও পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করি। তিনি বলেন, দৈনিক সংগ্রাম অফিসে ঢুকে হামলা, ভাঙচুর করেছে সরকারি দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এতে প্রায় ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার মালামালের ক্ষয়ক্ষতি করা হয়েছে। আবুল আসাদের মতো একজন স্বচ্ছ ও শতভাগ লেখককে ধরে নিয়ে সাজানো মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে।
সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি মুহম্মদ নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর মহাসচিব এম আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক বিশিষ্ট লেখক আবুল আসাদকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একে একে গণমাধ্যমগুলোর গলা টিপে হত্যা করছে আওয়ামী লীগ সরকার।
সাংবাদিকদের মধ্যে বেকারত্বের মহামারী চলছে। নামেমাত্র বেতনে পত্রিকায় চাকুরি করছে। অনেকে চাকুরীচ্যুত হয়েছে অনেক আগে থেকেই।
এম, আবদুল্লাহ বলেন, আমরা দলকানা হবোনা, উদারমনে কাজ করবো। যে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিৎ আমাদের। মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমান, ফরহাদ মাজহারের মতো বুদ্ধিজীবীদের কলম স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছে। সত্য লিখনির অপরাধে নির্বাসিত জীবনে সময় কাটাচ্ছে অনেক কলমযোদ্ধা। তিনি বলেন, আমাদের মাঝে বিভেদ যেন না হয়। ঐক্যের শক্তিই সুদিন ফেরাবে।
সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ সঞ্চালনায় সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর সহকারী মহাসচিব জিএএম আশেক উল্লাহ, সিনিয়র সহসভাপতি নুরুল আমিন রুকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের জনকল্যাণ সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসেন, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এস,এম আমিনুল হক চৌধুরী। অতিথি ছিলেন কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক সৈকতের সম্পাদক মুহাম্মদ মাহবুবর রহমান।

 

দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রতিবেদন পেশ করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক হাসানুর রশীদ। অর্থ প্রতিবেদন পেশ করেন মুহাম্মদ হাশিম। সভাপতি মুহম্মদ নুরুল ইসলামের সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রথম অধিবেশন সমাপ্ত হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় কাউন্সিল অধিবেশন। বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলে। এতে মোট ৫০ জন ভোটারের মধ্যে ৪৯ জন ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটগ্রহণ শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফলাফলে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মমতাজ উদ্দিন বাহারী। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন আনছার হোসেন। এছাড়া সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন হুমায়ুন সিকদার। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন প্রবীণ সাংবাদিক বদিউল আলম, এসএম আমিনুল হক চৌধুরী ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •